| |
               

মূল পাতা শিক্ষাঙ্গন মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভীর কর্মময় জীবন


মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভীর কর্মময় জীবন


রহমত নিউজ     16 October, 2022     10:23 PM    


দেশের সর্ববৃহৎ কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের মহাপরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী। তিনি আগামী ১ রবিউস সানি থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী কিশোরগঞ্জের কৃতিসন্তান দেশবরেণ্য আলেমে-দীন ও সংসদ সদস্য মাওলানা আতাউর রহমান খান রাহমাতুল্লাহি আলাইহির বড় ছেলে। তিনি একাধারে একজন বিদগ্ধ আলেম, দার্শনিক বক্তা, সমাজকর্মী, শিক্ষক, খতিব এবং সাংবাদিক। দৈনিক ইনকিলাবের স্বর্ণযুগ থেকেই যুক্ত রয়েছেন এবং বর্তমানে তিনি ইনকিলাবের সিনিয়র সহকারী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত আছেন।

দীনি ও জেনারেল উভয় শিক্ষায় শিক্ষিত মাওলানা নদভীর পড়াশোনা জীবনের প্রাতিষ্ঠানিক হাতেখড়ি হয় কিশোরগঞ্জের জামিয়া ইমদাদিয়াতে ভর্তি হওয়ার মাধ্যমে। মাওলানা নদভী দাওরায়ে হাদিস সমাপ্ত করেছেন ১৯৮৩ সালে কিশোরগঞ্জ এর জামিয়া ইমদাদিয়া থেকে। এরপর চট্টগ্রামের জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া থেকে আরবি সাহিত্যে তাখাসসুস করেছেন ১৯৮৪ সালে এবং স্নাতক সম্পন্ন করেছেন ১৯৮৫-৮৬ সালে ভারতের নদওয়াতুল ওলামায়। এম.এ ডিগ্রী নিয়েছেন ১৯৯৪ সালে। এরই মাঝে আবার ১৯৮৫ সালে মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামি দাওয়াহ ও সংস্কৃতির ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ১৯৯২ সালে রাষ্ট্র ও রাজনীতি বিজ্ঞানে ডিপ্লোমা করেছেন। এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে মিডিয়ার ওপর আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ কোর্সও করেছেন জনাব নদভী।

বেফাকের নতুন মহাপরিচালক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী

উবায়দুর রহান খান নদভীর পিতার নাম মাওলানা আতাউর রহমান খান এবং মাতার নাম মুরশিদা-ই-আমিনা। ১৯৬৬ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জের জামিয়া রোডস্থ নূর মঞ্জিলে জন্মগ্রহণ করেন নদভী। বর্তমানে তিনি বসবাস করেছেন ২/১ আর কে মিশন রোড, ঢাকায়। শিক্ষকতা এবং সাংবাদিতকায় সুদীর্ঘ ৩০ বছর যাবৎ আস্থার সাথে নিজেকে জড়িত রেখেছেন মাওলানা নদভী। ২৫ বছর যাবৎ জুমআর নামাজের খতিব হিসেবে দায়িত্বরত রয়েছেন ঢাকার মিরপুরস্থ মদিনা নগর মসজিদে।

১৯৭৮ সালে দৈনিক আল-আজাদে মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভীর প্রথম লেখা প্রকাশিত হয়। লেখার নাম ছিলো সাহিত্য সাধনা। সাইয়্যেদ আবুল হাসান আলী নদভি রচিত আমার দেখা প্রাচ্য নামের একটি গ্রন্থের অনুবাদ তার প্রথম প্রকাশিত অনুবাদ গ্রন্থ এবং নিজস্ব প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থের নাম অমুসলিম মনীষীদের চোখে আমাদের প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এছাড়া আরো বেশ কিছু আলোচিত ও বিবেক জাগানিয়া গ্রন্থের জনক তিনি। মাওলানা নদভী রচিত আধুনিক বিশ্বের চল্লিশজন নওমুসলিমের আত্মকাহিনী, ইতিহাসের কান্না, হৃদয় থেকে, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কেমন ছিলেন, রক্তভেজা গুজরাট, ছেঁড়া পাতা, মুজাহিদের জীবনকথা এবং আফগানিস্তানে আমি আল্লাহকে দেখেছি বইগুলোর প্রত্যেকটাই বেশ সাড়া জাগানো। দৈনিক ইনকিলাবে কাজ করার পাশাপাশি দেশের প্রায় সব বড় বড় কওমি মাদরাসাতে অতিথি অধ্যাপক হিসেবে ক্লাস নেওয়াটা মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভীর বিশেষ একটি পরিচয়।

ভ্রমণ করা মাওলানা নদভীর একটি বিশেষ শখ। কাজ ও শখের সম্মিলন ঘটিয়ে তিনি ভ্রমণ করেছেন ভারত, পাকিস্তান, ইরান, কুয়েত, কাতার, আবুধাবি, দুবাই ও সৌদি আরবসহ আরো বেশ কয়েকটি দেশ। মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী লিখিত বই বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছে। আলেম সমাজকে লেখালেখি ও মিডিয়ামুখি করতে অনন্য ভূমিকা পালন করছেন তিনি। গুণী এই মানুষটি অর্জন করেছেন বেশ কিছু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মাননা। কিশোরগঞ্জ সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদ পদক, শুরূক সাহিত্য পদক, শিকড় সম্মননা পদক, আদর্শ নারী গুণীজন সম্মাননা এবং মারকাজুত তাহফিজ সম্মাননা তন্মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য।

নাম : উবায়দুর রহমান খান, পিতা : মাওলানা আতাউর রহমান খান রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, মাতা :সাইয়িদা মুর্শিদা-ই-আমিনা তুকমানি

জন্ম : ২৪ সেপ্টেম্বর ১৯৬৬ স্থায়ী ঠিকানা : নূর মনজিল, জামিয়া রােড, কিশােরগঞ্জ। বর্তমান ঠিকানা:২/১ আর কে মিশন রােড (ছয় তলা), ঢাকা-১২০৩

শিক্ষাজীবন : ১. দাওরায়ে হাদীস (মাস্টার্স সমমান, আরবী ও ইসলামিক স্টাডিজ) ২. এম এম এ (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়) ৪. দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে সম্মানসূচক সনদ লাভ ৪. অনার্স (নদভী) নদওয়া ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি (লখনৌ, ভারত) ৫. প্রশিক্ষণ দাওয়াহ ও কালচারাল কোর্স (মদীনা ইসলামিক ইউনিভার্সিটি,সউদি আরব) ৬. রাজনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিশেষ ডিপ্লোমা (সংযুক্ত আরব আমিরাত) ৭. মিডিয়া ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষ ডিগ্রী (রিয়াদ, সৌদি আরব) ৮. কূটনীতি ও পারস্পরিক সংলাপ বিষয়ে সার্টিফিকেট কোর্স (ভারত) ৯.তাখাসসুস,আদাব ওয়াল ফিকরিল ইসলামি,চট্টগ্রাম৷

কর্মজীবন: ১. সিনিয়র সহকারী সম্পাদক, দৈনিক ইনকিলাব ২. নির্বাহী সম্পাদক, সাপ্তাহিক মুসলিম জাহান (১৯৯১-২০০১)/ উপদেষ্টা সম্পাদক, মাসিক নেয়ামত। ৩. অতিথি অধ্যাপক, দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন উচ্চতর ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৪. ইসলাম প্রচারে ভ্রমণ, লেকচার ও গণসংযােগ ৫. উস্তাজ, ফরিদাবাদ, যাত্রাবাড়ি ও মারকাজুদ দাওয়াহ (তাখাসসুসাত) হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ। মা যা খাসিরাল আলামু বি ইনহিতাতিল মুসলিমীন।

সামাজিক কর্মতৎপরতা : ১. সভাপতি, দেশ অধ্যয়ন কেন্দ্র। ২. সেক্রেটারি জেনারেল , রাবেতা আল আদাবিল ইসলামী আল আলামিয়্যাহ, বাংলাদেশ চ্যাপ্টার ৩. প্রেসিডেন্ট, বিএসআরসি।

প্রকাশনা, অভিজ্ঞতা ও বিশেষ যােগ্যতা : [৩২ বছরের সাংবাদিকতার জীবনে শত শত প্রবন্ধ নিবন্ধসহ শতাধিক গ্রন্থ প্রণয়ন। প্রকাশিত বই প্রায় ৪০ টি। [বাংলা, হিন্দি, উর্দু, ফার্সি, আরবী ও ইংরেজিসহ কিছু ভাষা লেখা, বলা ও অনুবাদের যােগ্যতা। ] দেশের অনেকগুলাে সাময়িকি ও অনলাইন নিউজ পাের্টালের উপদেষ্টা সম্পাদক। ফিকাহ বিষয়ক সমাধানদাতা। [ দেশেবিদেশে বহু সভা-সমিতি, সেমিনার-সিম্পােজিয়ামে প্রবন্ধ উপস্থাপন, বক্তৃতা ও অতিথিরূপে অংশগ্রহণ। [অসংখ্য ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং টক-শােতে অতিথি, বক্তা, রিসাের্স পারসন ইত্যাদি হিসাবে যােগদান। [ সারা দেশের বিভিন্ন ইসলামী সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সদস্য, উপদেষ্টা বা দায়িত্বশীল হিসাবে নিয়ােজিত। [অনেকগুলাে দেশ ভ্রমণ ও পর্যটন।

চার তরিকার বহু বুজুর্গের বিশেষ করে ১.শাইখ আবদুল আজিজ মাক্কি আল কুরাইশী, ২. শাইখ আবদুল্লাহ বিন আবদুর রহমান আল খাওলানি আল ইয়ামানী ৩. শাইখ আহমাদ এফেন্দি শাজলি তুর্কি, ৪. মুহিউস সুন্নাহ শাইখ মাহমুদুল হাসান খলীফায়ে হারদুয়ী হযরত, ৫.শাইখ ইসহাক ইমামাবাদি (লাহাের), ৬.শাইখ সিরাজ বিন গােলাম মুহাম্মদ দীনপুর শরীফ (মুলতান), ৭. ফকীর জুলফিকার আহমদ নকশবন্দী মুজাদ্দেদী সাহেবানের খেলাফত ও ইজাযত প্রাপ্ত।

সূত্র : প্রিয় ডটকম ও কওমি পিডিয়া ডটকম